ভাগে কোরবানি দেওয়ার নিয়ম - ৬ ভাগে কোরবানি দেওয়া যাবে কি

আপনি কি ভাগে কোরবানি দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন এবং ৬ ভাগে কুরবানী দেওয়া যাবে কিনা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি একমাত্র আপনার জন্য। আজকের এই আর্টিকেলে

ভাগে-কোরবানি-দেওয়ার-নিয়ম

আমরা কোরবানি দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এবং ভাগে কুরবানী দেওয়া যাবে কিনা বা যদি ভাগে কুরবানী দেওয়া যায় তাহলে কয় ভাগে কুরবানী দেওয়া ভালো হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই আপনি যদি কোরবানির নিয়ম সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি ভালোভাবে করতে থাকুন।

আপনি যে অংশ থেকে পড়তে চান সেখানে ক্লিক করুন

ভাগে কোরবানি দেওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নিন

সাধারণত আমরা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকি বা জানতে চেয়ে থাকি যে, গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, উট, এবং দুম্বা মূলত কয় ভাগে কুরবানী দেওয়া উত্তম। আবার আমাদের মাঝে অনেক মানুষ আছেন তারা জানেন না যে কোরবানির পশু ভাগে কোরবানি দেওয়া যায় কিনা। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলি হ্যাঁ, কোরবানির পশু ভাগে কোরবানি দেওয়া যায়।

কিন্তু কোরবানি দেওয়ার কিছু নিয়ম নীতি ও বিধি-বিধান আছে সেই নিয়ম গুলো মেনে ভাগে কোরবানি দিতে হবে তাহলে কোরবানি হবে। অন্যথায় নিয়ম অনুযায়ী কোরবানি না করলে কখনোই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। ইতোমধ্যে আপনিও নিশ্চয়ই জেনে গিয়েছেন যে ভাগে কোরবানি দেওয়া যাবে কিনা? তাহলে চলুন এবার জেনে নিই

আরো পড়ুনঃ2025 সালের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার বাংলাদেশে

ভাগে কোরবানি দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। দেখুন আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানকে কেন কোরবানি করতে বলেছেন বা কেন কোরবানির ফরজ করা হয়েছে এবং কোথা থেকে কোরবানির উৎপত্তি হয়েছে সেই সম্পর্কে আমাদের পূর্বের একটি আর্টিকেলে স্টেপ বাই স্টেপ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সেখান থেকে আপনি

ভালোভাবে আর্টিকেলটি পড়ে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। তবে আপনার সুবিধার্থে এবং আপনি যেন আরো ভালোভাবে বুঝতে পারেন সেজন্য তার কিছু অংশ আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করছি। যখন আল্লাহ তা'আলা কতৃক হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে স্বপ্নে দেখান যে তার সব থেকে নিকটবর্তী ও প্রিয় বস্তুটিকে কোরবানি করতে হবে এক পর্যায়ে তিনি

বুঝতে না পেরে উট কোরবানি দিলেন কিন্তু আল্লাহর দরবারে কোরবানি কবুল হলো না। এবার যখন আবারো আল্লাহতালা স্বপ্নে প্রিয় বস্তুটি কে কোরবানি দেওয়ার জন্য বললেন এবারও তিনি বুঝতে না পেরে দুম্বা কুরবানী দিলেন কিন্তু এবারও কোরবানি কবুল হলো না। আল্লাহ তায়ালা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম এর স্বপ্নে এসে আবারো

সবথেকে নিকটবর্তী ও অতি আদরের বস্তুটিকে কোরবানি দেওয়ার কথা বললেন। তখন হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম বুঝতে পারলেন যে, আল্লাহ তাআলা আমাকে পরীক্ষা করছেন এবং আমার সন্তান অর্থাৎ হযরত ইসমাইল আঃ কে কোরবানি করতে হবে। অতঃপর তিনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন। এক পর্যায়ে তিনি তার সন্তানকে

কোরবানি করতে নিয়ে গেলে আল্লাহ তা'আলা তাঁর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে তার প্রতি সন্তুষ্ট ও রাজি খুশি হয়ে যেই মুহূর্তে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে জবেহ করতে যাবেন ঠিক সেই মুহূর্তে মহান দয়াময় আল্লাহ তায়ালা ইসমাইল আলাইহিস সালামকে টেনে নিয়ে একটি হালাল পশু দিয়ে দিলেন এবং

সাথে সাথে কুরবানী হয়ে গেল। আর তখন থেকেই কোরবানির উৎপত্তি হয়েছে এবং আল্লাহ তাআলা সকল সামর্থ্যবান মুসলিমকে কুরবানী দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এটা আল্লাহ তায়ালার হুকুম। তবে এখানে একটা ভাবার বিষয় যে যদি সেই মুহূর্তে পশু কুরবানী না হয়ে হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম কোরবানি হয়ে যেতেন তাহলে আমরা

গরু ছাগলের পরিবর্তে আমাদের সন্তান সন্ততিদেরকে কোরবানি করে ফেলতাম এবং তাদের গোস্ত খেতাম এভাবে পর্যায়ক্রমে চলে আসতো। তাই একটু ভাবুন সৃষ্টিকর্তা পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহতালা কতই না দয়ালু যে আমাদের প্রতি রহমত করেছেন এবং আমাদেরকে বাঁচিয়েছেন। অতএব আমরা কেন তার বিধি-বিধান গুলো মানবো না এবং

সামান্য একটি পশু কোরবানি দিতে পারবো না তাই আসুন আমরা প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা আল্লাহকে রাজি খুশি করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে আল্লাহর ওয়াস্তে কোরবানি দিই। কোরবানির নিয়ম সম্পর্কে বলতে গেলে বলা বাহুল্য যে, কোরবানি মূলত একাই দেওয়া উত্তম তবে আপনার একার পক্ষে যদি

কোরবানি দেওয়া সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে আপনি ভাগা দিতে পারেন। আসলে কুরবানী বিষয়টি সহজ মনে করলেও অত সহজ না কারণ কোরবানি অনেক সেনসিটিভ একটি বিষয়। আপনার একমাত্র হালাল উপার্জনের অর্থ সম্পদ থেকে কুরবানী দিতে হবে সে অংশে যদি এক চুল পরিমাণও হারাম উপার্জন থাকে তাহলে কোশ্মিনকালেও

কোরবানি কবুল হবে না। আর ভাগার ক্ষেত্রে বলি যারা ভাগা দিবেন তাদের প্রত্যেকেরই হালাল উপার্জন থেকে কোরবানির পশু কিনতে হবে এবং জয়জন ভাগিদার থাকবেন তাদের প্রত্যেকের মতামত হতে হবে একই দ্বিমত পোশন করা যাবেনা এবং উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এই আশা ব্যক্ত রেখে কোরবানি করতে হবে কবুল করা না করার মালিক একমাত্র আল্লাহ।

৬ ভাগে কোরবানি দেওয়া যাবে কি

এতক্ষণ আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে কোরবানি সম্পর্কে কিছু কথা এবং ভাগে কুরবানী দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম ও জানলাম। এবার আমরা জানবো যে, ৬ ভাগে কুরবানী দেওয়া যাবে কিনা। মূলত কুরবানী একাই দেওয়া উত্তম তবে একার পক্ষে যদি সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে ভাগা দিতে পারেন।

তবে ভাগা সাতজন পর্যন্ত দেওয়া যায়। বড় পশু অর্থাৎ গরু মহিষ ও উটের ক্ষেত্রে দুইজন তিনজন চারজন পাঁচজন এবং ৭ জন পর্যন্ত ভাগা দেওয়া জায়েজ আছে। আর ছাগলের ক্ষেত্রে একজনই কোরবানি দিতে পারবেন দ্বিতীয় কোন শরিক অংশগ্রহণ করতে পারবে না। যেহেতু ছাগলের কুরবানির ক্ষেত্রে ভাগা দেওয়া জায়েজ নেই

সেক্ষেত্রে আপনি যদি ছাগল কুরবানী দেন তাহলে একটি গোটা কোরবানি হয়ে যাবে। আর যদি গরু মহিষ অথবা উটের ভাগা দেন সে ক্ষেত্রে ৭ বছর ভাগা দিলে একটি গোটা কোরবানি হবে এখন সেটা আপনার ইচ্ছা। আর কুরবানী সম্পর্কে আরো একটি কথা বলি যদি কারো কোরবানি দেওয়ার মতো সমর্থন না থাকে তাহলে

জোর জবরদস্তি করে কোরবানি দেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই কোরবানি শুধু সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য ফরজ করা হয়েছে আর সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের উপর গরীবদের হক রয়েছে।

কোরবানির পশু কেমন হতে হবে

সমগ্র মুসলিম জাতির বাৎসরিক দুই ঈদের বড় আনন্দের একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর এবং দ্বিতীয়টি হল ঈদুল আযহা আর ঈদুল আযহার সব থেকে বড় আকর্ষণ হচ্ছে কোরবানি। কুরবানী শব্দের অর্থ হল আল্লাহকে রাজি খুশি করা, আল্লাহর রাস্তায় হালাল পশু সদকা করা, ত্যাগ করা, আত্মসমর্পণ করা। তাহলে আল্লাহকে রাজি খুশি ও সন্তুষ্ট করার জন্য যদি

কোরবানির-পশু-কেমন-হতে-হবে

হালাল পশু সদকা করার কথা বলা হয় সেক্ষেত্রে আপনি যে পশুটি কোরবানি করবেন সেটি অবশ্যই পছন্দসই এবং খুত বিহীন হতে হবে নিশ্চয়ই। তাহলে এবার প্রশ্ন হল খুত বিহীন কোরবানির পশু চেনার উপায় কি কি। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক

  • প্রথমত কুরবানী পশু কেনার আগে পশুটিকে অবশ্যই একটু হাঁটিয়ে দেখতে হবে যেন ল্যাংড়া বা পা ভাঙ্গা ও মচকা না হয়।
  • এরপর লক্ষ্য রাখবেন যেন শিং গোঁড়া থেকে ওঠা অথবা শিংয়ের এক তৃতীয়অংশও যেন ভাঙ্গা না থাকে
  • পশুটির যেন কান কাটা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • পশুটি লাল রঙের হলে সব থেকে ভালো হয়
  • পশুর শরীরে যেন ঘা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে
  • কোরবানির পশুটি যেন অসুস্থ না হয় আমি পশু দেখে নিতে হবে
  • যদি গাভী কেনা হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করে নিতে হবে যেন পেটের মধ্যে বাচ্চা না থাকে।

কোরবানির মাংস কয়ভাগে ভাগ করতে হবে জেনে নিন

আমরা যারা কোরবানি দিয়ে থাকি তাদেরকে অবশ্যই কোরবানির মাংসগুলো সমান ৩ ভাগে ভাগ করতে হবে তার একভাগ নিজের জন্য রাখতে হবে, দ্বিতীয়ভাগ সমাজের লোকদের জন্য, এবং তৃতীয়ভাগ নিজের আত্মীয়স্বজন ও ফকির মিসকিনদের প্রদান করতে হবে। আর যারা কোরবানি দিতে পারবেনা শুধু সমাজ থেকে মাংস পাবে তাদের

ভাগ করার কোন প্রয়োজন নেই। এখন অহরহই মানুষকে দেখা যাচ্ছে কোরবানির মাংসগুলো ১ মাস ২ মাস ৩ মাস বা এরও অধিক সময় ধরে রেখে দিচ্ছে এভাবে কোরবনির মাংস রাখা কোনভাবেই ঠিক নই। কোরবানির মাংস ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই খেয়ে নেওয়া উত্তম।

ভাগে কোরবানি দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে শেষ কথাঃ

কোরবানির নিয়ম সম্পর্কে বলতে গেলে শেষ কথাই একটা কথা বলতে চাই আপনারা যারা কুরবানী দিবেন তারা যদি ভাগে কুরবানী দিতে চান তাহলে অবশ্যই সঠিক পন্থায় এবং সৎ নিয়ম অনুসরণের মাধ্যওম কুরবানী দেওয়ার চেষ্টা করবেন এতে আল্লাহ তায়ালা আপনার কোরবানি কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। এবং চেষ্টা করবেন

কোরবানিতে শরিকদার কয়জন হবেন তাদের সিদ্ধান্ত ও মতামত গুলো অবশ্যই একমত হতে হবে এতে কোন ধরনের বাধ্যবাধকতা ও দ্বিমত পোষণ করা যাবে না অন্যথায় কুরবানী কবুল হবে না। তবে আপনার ক্ষেত্রে বলি আপনি যদি একাই কুরবানী দেন তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ আর যদি একার পক্ষে সম্ভব না হয় বরং ভাগে অংশগ্রহণ করেন তাহলে

অবশ্যই ভাগে কুরবানী দেওয়ার নিয়ম গুলো মেনে কুরবানী দেওয়ার চেষ্টা করুন। পরিশেষে আরও একটি কথা আপনাকে বলতে চাই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি সামান্যতমও উপকার হয়ে থাকে তাহলে আপনি আর্টিকেলটি আপনার টাইমলাইনে রেখে দিতে পারেন এবং এই ধরনের আরো আর্টিকেল পেতে ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

গ্রীনল্যান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url